red ant on white mushroom

দক্ষ কর্মী পিঁপড়া

You didn’t come this far to stop

এক কোম্পানিতে প্রতিদিন সকালে একটি ছোট পিঁপড়া ঠিক সময়ে কাজে এসে কারো সাথে গল্প গুজব না করে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরু করত, তাতে প্রচুর উৎপাদন হতো, কোম্পানির খুব লাভ হতো।

কোম্পানির সিইও সিংহ অবাক হয়ে দেখলো, পিঁপড়াটি কোনো প্রকার সুপারভিশন ছাড়াই প্রচুর কাজ করছে ! সে ভাবল পিঁপড়াকে যদি কারো সুপারভিশনে রাখা যায় তবে নিশ্চয় আরও বেশি উৎপাদন করতে পারবে!

তাই সিংহ একটি তেলাপোকাকে পিঁপড়ের সুপারভাইজার হিসাবে নিয়োগ করল, যার এই কাজে ব্যাপক অভিজ্ঞতা ছিল এবং যিনি চমৎকার প্রতিবেদন লেখার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তেলাপোকার প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল একটি ক্লকিং-ইন অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম স্থাপন করা। তিনি মনে করলেন, তার রিপোর্ট লিখতে এবং টাইপ করতে সাহায্য করার জন্য তার একজন সেক্রেটারি দরকার। তাই সে মাকড়সাকে নিয়োগ দিলো যে ফাইলপত্র সংরক্ষন করবে এবং সমস্ত ফোন কল পর্যবেক্ষণ রাখবে।

তেলাপোকার বানানো সুন্দর প্রতিবেদনে সিংহ মশায় বেশ খুশি হয় যেখানে গ্রাফের সাহায্যে বিশ্লেষন করা হতো। এগুলো বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে উৎপাদন গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষন করতে পেরে সিংহ বেজায় খুশি।

এইসকল রিপোর্ট তৈরির জন‍্য তেলাপোকা একটি নতুন কম্পিউটার এবং একটি লেজার প্রিন্টার কিনে এবং আইটি বিভাগ পরিচালনা করার জন্য মাছিকে নিয়োগ করে।

কোম্পানির সবচেয়ে দক্ষ এবং পুরোনো কর্মী পিঁপড়া, যে একসময় প্রচুর কাজ করে মনের সুখে বাড়ি যেত, এখন তাকে প্রচুর পেপারওয়ার্ক করতে হচ্ছে। উৎপাদন বাদ দিয়ে কাগজপত্র এবং মিটিংয়ে হাজিরা দিতে সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় নষ্ট হতো। ফলে কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতা কমতে লাগল।

সিংহ দেখতে পেল উৎপাদন কমে যাচ্ছে, তাই সিদ্ধান্ত নিল, পিঁপড়া যে বিভাগে কাজ করত, সেই বিভাগের দায়িত্বে একজন ডিপার্টমেন্ট হেড নিয়োগ করার এখনই উপযুক্ত সময়। সিংহ ঝিঁঝিপোকাকে এই পদে নিয়োগ দিলো। ঝিঁঝিপোকা প্রথম দিনেই তার অফিসের জন্য একটি মোটা কার্পেট এবং একটি এর্গোনমিক চেয়ার কেনার অর্ডার দিলো। এরপর কম্পিউটার অপারেট করার জন‍্য তার আগের অফিস থেকে ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়োগ দিলো, যে অফিসের জন‍্য বাজেট নিয়ন্ত্রণ এবং স্ট্র‍্যাটেজিক প্ল্যানিং তৈরি করতে সাহায্য করবে।

পিঁপড়ে আগে চমৎকার পরিবেশে কাজ করতো, সেখানে তার স্বাধীনতা ছিল, মনের আনন্দে কাজ করতো, এখন সেখানে আর কেউ হাসে না এবং সবাই উটকো কাজের চাপে ত‍্যাক্ত বিরক্ত!

পরিস্থিতি দেখে ডিপার্টমেন্ট হেড ঝিঁঝিপোকা সিইও দ্য লায়নকে “কোম্পানির কাজের পরিবেশ উন্নয়ন” শীর্ষক স্টাডি শুরু করতে রাজি করায়। পিঁপড়ার উৎপাদন বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পর্যালোচনা করার পর সিংহ জানতে পারল যে, উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে, তাই সে এক বিখ‍্যাত কনসালটেন্ট পেঁচাকে পরামর্শদাতা নিয়োগ করল, যিনি অডিট করে উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিবেন। পেঁচাটি ৩ মাস বেশ খাটাখাটনি করে এবং বেশ কয়েকটি খণ্ডের একটি বিশাল প্রতিবেদন দাখিল করে, যেখানে বলা হয়েছিল যে "এই অফিসে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কর্মী রয়েছে..তাই কর্মী ছাঁটাই করা হোক।

পরের সপ্তাহে বেশ কয়েকজন কর্মী ছাঁটাই করা হলো। অনুমান করুন তো, প্রথমে কে চাকরি হারালো?

……কারণ, পেঁচার রিপোর্টে লেখা ছিল, ‘এই কর্মীর মোটিভেশনের ব্যাপক অভাব রয়েছে এবং সর্বদাই নেতিবাচক আচরণ করছে, যা অফিসের কর্মপরিবেশ নষ্ট করছে।

Reference
Anonymous. (2022). The story of the productive ant: A corporate parable. Retrieved from https://examplewebsite.com/ant-corporate-parable